নিজস্ব প্রতিবেদক
বাবা সমবায় সমিতির সভাপতি হয়েই বেলাল স্থায়ীভাবে জমি দখলসহ সমবায় অধিদপ্তরের কাছে স্বল্পমূল্য জমি কিনে নেওয়া নতুন কৌশল শুরু করেছে বলে জানাগেছে। এর আগেও
বালিয়াডাঙ্গী গণউন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতির পরিচালকের স্ত্রী জেমি আক্তার নামে
বালিয়াডাঙ্গী কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির ৩৯ শতক জমি আত্মসাৎ করার চস্টা করলে এলাকাবাসীর চাপে পিছু হটতে বাধ্য হয় সে সময়।
কিন্তু বেলাল অনেক আগেই বলেছিল সে বা তার বাবা বাবর আলী কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হলেই সমিতির জমি বিক্রির প্রস্তাবনা পাঠাবেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে।
আরো জানা য়ায়,দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে গণউন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতির বেলালউদ্দীন হুক্কার দিয়ে বলেছিলো আমার কাংঙ্খিত লোকটি এমপি হলে ছলে – বলে -কৌশলে কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির জমিটি তার স্ত্রীর নামে করবেই করবে এমন দাম্ভিকতা প্রকাশ করেন।তবে তার কাংঙ্খিত লোকটি এমপি হয়েছে কিনা এখনো জানা যায়নি।
প্রবীণ ব্যক্তিদের সংগে কথা বলে জানাগেছে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বালিয়াডাঙ্গী থানার সকল গভীর নলকুপ ও ললিত পাম্পের(এলপি)’র আওতাধীন চাষীদের নিয়ে একটি সমবায় সমিতি গঠিত হয়।
তখন নাম দেওয়া হয় বালিয়াডাঙ্গী কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি।ওই সমিতির ঘর করার জন্য ১৯৬৮ সালে ৩৯ শতক জমি মধ্যে স্বপ্লমূল্যে কিছু জমি ক্রয় করেন এবং কিছু জমি অধিগ্রহন করেন। শাহনেওয়াজ ওরফে নইমুলসহ অনেকেই অধিগ্রহনের টাকা এখনো গ্রহণই করেন নি বলে নইমুলের পরিবার সুত্রে জানাগেছে। ওই জমিতে পরে সমিতির চাষীদের সুবিধা ও চাষী পর্যায়ে ঠিক সময়ে বীজ সরবরাহ করার জন্য একটি বীজ ঘুদামঘর ও বীজ শুকানোর চাতাল নির্মাণ করেন।
সে সময় বালিয়াডাঙ্গীর সকল শিক্ষিত ও সমাজের ভদ্র ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত এটিই সবচেয়ে বড় সমিতি বা সংগঠন।এই সমিতির মাধ্যমে তখন ব্যাংকের কাছে লোন নিয়ে সমিতির সদস্যদের মাঝে লোন কার্যক্রম চলাতো তাঁরা।কোন এক সময় সমিতির সদস্যদের মৃত্যুসহ বিভিন্ন কারণে সমবায় সমিতির কার্যক্রম থেমে গেলে অফিস,গুদামঘর ও বীজ শুকানোর চাতালটি পরে থাকে। এসময় পরিত্যাক্ত থাকাবস্থায় গুদামের পাশে থাকা ঘরটি সাংবাদিকদের সংগঠন বালিয়াডাঙ্গী প্রেসক্লাবের অফিস হিসেবে ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
পরে গণউন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি চতুর বেলালউদ্দিন এটি ভাড়া হিসেবে নিয়ে গুদামঘরটি দখলে নেন।ভাড়ার কিছুদিন পরে চাতালের ইটগুলো তুলে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন।এর পরে শুরু হয় সমিতির ৩৯ শতক জমির অংশীদার খোজার পালা।এক পর্যায়ে তার(বেলালের) নানা শ্বশুরের মা পাখালিকে অংশীদার বানীয়ে সমিতির ওই জমি তার স্ত্রী জেমি আকতারের নামে গোপনে রেজিষ্ট্রি করে নেন। জমি রেজিষ্ট্রি করেই বহুতল ভবন নির্মানের কার্যক্রম শুরু করলে সমিতির লোকজনকে বেলাল বলেন এটি সমিতির ভবন।অন্যদিকে কার্যক্রম চলে স্ত্রী জেমী আকতারের নামে কয়েক কোটি টাকা ব্যায়ে বহুতল ভবন তৈরীর কার্যক্রম।এটি প্রকাশ হলে স্থানীয় এলাকার লোকজন সমবায় অফিসসহ জেলা প্রশাসক ও অন্যান্য দপ্তরে অভিযোগ দিলে বেলাল পিছু হটেন।
সমবায় সমিতিসহ বিভিন্ন দপ্তরে বলতে বাধ্য হন এটি সমিতির সরকারী ভবন। “সমবায়ের ভবন বিনা বরাদ্দে কয়েক কোটি টাকায় কেন বেলাল নির্মাণ করেন,কোন স্বার্থে? এমন প্রশ্ন এখন এলাকার সকল সচেতন মহলের।
বেলাল এটি নিজ অর্থে করলেও সমবায় অধিদপ্তরকে ভবন নির্মাণের টাকা হাওলাত হিসেবে দিয়েছেন বলে জানান বেলাল। অনেকেই এটিকে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো গল্প বলে মনে করেন।
পরে সমবায় সমিতির জমির সকল কাগজ পত্র হাতিয়ে নিয়ে ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠাতাকালীন সদস্যদের বাদ দিয়ে চতুর বেলাল,বেলালের বাবা বাবর আলীকে সদস্য বানিয়ে সমিতিকে দখলে নেন। এখন কোন সময় তার বাবা বাবর আলী সভাপতি হয় আবার কখনো সে (বেলালউদ্দীন) নিজে নিজে সভাপতি বনে যান।কারণ এখন যে সদস্য গুলো তার কাছের লোক তাদেরকেই কমিটিতে রাখা হয়।যারা সব সময় বেলালের কথায় উঠাবসা করেন শুরু তাদেরই কমিটিতে রাখা হয়।এমনকি তার সমিতির কর্মচারী মকবুল হোসেনও সমবায় সমিতির সদস্যসহ তার পরিবারের সদস্যদেরকেও ওই সমিতির বিভিন্ন নলকুপের সদস্য প্রতিনিধি বানিয়ে রাখা হয়।
তার বাবা বাবর আলী কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হলে বিভিন্ন কৌশলে সমবায়ের সকল ঘরভাড়াটিয়াদের বের করে দেওয়ার কৌশল শুরু করেন।তার কথায় শুর না মিলালে ঘরভাড়াও দেওয়া হয় না।
বেলাল ও তার বাবা বাবর আলীর সংগে দ্বিমত দেখা দিলে সমবায়ের জমিতে দোকান ভাড়াটিয়া আব্দুল,হামিদ,হাফিজুল ও গোলজারসহ কয়েক জনকে বের করে দিয়ে নিজ দখলে নেন।
বর্তমানে ১ তলায় তার নিজস্ব সমিতি গণউন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি ও তার বাবার একটি ফিড এর দোকান ছাড়া আর কাউকে ভাড়া দেওয়া হয় নি।
সমিতির ভবনটি এখনো অনিশ্চিত।অনেকের প্রশ্ন ভবনটি সমিতির নাকি বেলালের স্ত্রী জেমি আকতারের নির্মানাধীন বিলাশ বহুল ভবনটি!