ঢাকা ০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পঞ্চগড়ে যুবলীগ নেতাকে মারধরের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

স্টাফ রিপোর্টার।।

পঞ্চগড়ে যুবলীগ নেতা শাহাদত হোসেন সাদাতকে মারধরের ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানা পুলিশ। শনিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে সদর উপজেলার পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের মৎস খামার ও হাফিজাবাদ ইউনিয়নের পুকুরী ডাঙ্গা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে মারধরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামীদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হাসানের আদালতে তোলা হয়। পরে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, পঞ্চগড় পৌরসভার পূর্ব চানপাড়া এলাকার হাসিবুল ইসলাম (২৬), পূর্ব জালাসী এলাকার কামরুল ইসলাম (৩৫) এবং সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের পুকুরীডাঙ্গা এলাকার এনামুল ইসলাম (৪৫)। তবে মামলার প্রধান আসামী মফিজুল ইসলাম সহ অপর ৭ আসামীকে এখনো ধরতে পারেনি পুলিশ।
মামলার এজহার ও মারধরের ভিডিও সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের পুকুরীডাঙ্গা এলাকার নিজ সার ও কীটনাশক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে সার কেনার জন্য ইজিবাইকে করে পঞ্চগড় জেলা শহরের দিকে যাচ্ছিলেন সদর উপজেলা যুবলীগের সহ সাধারণ সম্পাদক শাহাদত। পরে পঞ্চগড় জেলা শহরের জালাসী ভাসানী পার্ক এলাকায় পৌঁছালে তার ইজিবাইকের গতিরোধ করেন ওই এলাকার মফিজুল, জহিরুল, আল আমিন, রফিকুল, শরিফ, হাসিবুল, নাঈম ও ফরিদ সহ ১০ থেকে ১৫ জন। তারা এলাকায় নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য নাঈমুজ্জামান ভূইয়া মুক্তার কর্মী সমর্থক বলে পরিচিত। তারা শাহাদতকে ইজিবাইক থেকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে রাস্তার পাশে নিয়ে যায়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করায় ও নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে কথা বলার অভিযোগে তাকে বেধড়ক মারধর শুরু করেন মফিজুলসহ তার সাথে থাকা লোকজন। এসময় তারা মারধরের ভিডিও ধারণও করে। ভিডিওটি মুহুর্তেই সামাজিক যোগযোগ মাধ্যেম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায় যুবলীগ নেতা শাহাদতকে একসাথে ১০ থেকে ১৫ জন ব্যক্তি কিল ঘুষি ও লাঠি দিয়ে মারধর করতে থাকে। ভিডিওতে মারধরকারীদের বলতে শোনা যায়, ওই বেটা তুই কাকে ফোন দিলি। শাহাদত জানায় আব্বাকে। তাকে আবার মারধর করতে করতে বলা হয় কেন তোর আব্বাকে ফোন দিলি তোকে কি আমরা মারছি। এসময় শাহাদত অসুস্থ জানালেও তাকে মারধর করতে করতে বলা হয় ওই তুই মুক্তা ভাইয়ের বিরুদ্ধে কি বলছিস সেটা আগে বল। এসময় কয়েকজন মারধরকারী বলতে থাকেন কই লাঠি কই। কয়েকজন মারধরকারী যুবলীগ নেতা শাহাদতকে কান ধরতে বাধ্য করেন। মারধর ও লাঞ্ছিতের দীর্ঘক্ষণ পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। ঘটনার পরপরই আহত অবস্থায় শাহাদতকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়।
পরে এ ঘটনায় ওই যুবলীগ নেতা শাহাদত বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই পঞ্চগড় সদর থানায় হত্যার উদ্যেশে মারধর, জখম, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও মারধরের হুকুমদানের অপরাধে মফিজুলকে প্রধান আসামী করে ১০ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাহিদুর রহমান বলেন, মামলার পর থেকে আমরা তৎপর ছিলাম। পরে শনিবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের মৎস খামার এলাকা থেকে হাসিবুল ও কামরুলকে এবং সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের পুকুরীডাঙ্গা এলাকা থেকে এনামুলকে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হই। শনিবার বিকেলে আদালতে তোলা হলে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় বলেন, আমরা অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি। মামলার প্রধান আসামীসহ বাকীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। #

ট্যাগস :
জনপ্রিয়

মাধবদীতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে গ্রেফতার রাকিবুলের শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

পঞ্চগড়ে যুবলীগ নেতাকে মারধরের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

আপডেট : ০৮:০২:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার।।

পঞ্চগড়ে যুবলীগ নেতা শাহাদত হোসেন সাদাতকে মারধরের ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানা পুলিশ। শনিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে সদর উপজেলার পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের মৎস খামার ও হাফিজাবাদ ইউনিয়নের পুকুরী ডাঙ্গা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে মারধরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামীদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হাসানের আদালতে তোলা হয়। পরে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, পঞ্চগড় পৌরসভার পূর্ব চানপাড়া এলাকার হাসিবুল ইসলাম (২৬), পূর্ব জালাসী এলাকার কামরুল ইসলাম (৩৫) এবং সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের পুকুরীডাঙ্গা এলাকার এনামুল ইসলাম (৪৫)। তবে মামলার প্রধান আসামী মফিজুল ইসলাম সহ অপর ৭ আসামীকে এখনো ধরতে পারেনি পুলিশ।
মামলার এজহার ও মারধরের ভিডিও সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের পুকুরীডাঙ্গা এলাকার নিজ সার ও কীটনাশক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে সার কেনার জন্য ইজিবাইকে করে পঞ্চগড় জেলা শহরের দিকে যাচ্ছিলেন সদর উপজেলা যুবলীগের সহ সাধারণ সম্পাদক শাহাদত। পরে পঞ্চগড় জেলা শহরের জালাসী ভাসানী পার্ক এলাকায় পৌঁছালে তার ইজিবাইকের গতিরোধ করেন ওই এলাকার মফিজুল, জহিরুল, আল আমিন, রফিকুল, শরিফ, হাসিবুল, নাঈম ও ফরিদ সহ ১০ থেকে ১৫ জন। তারা এলাকায় নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য নাঈমুজ্জামান ভূইয়া মুক্তার কর্মী সমর্থক বলে পরিচিত। তারা শাহাদতকে ইজিবাইক থেকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে রাস্তার পাশে নিয়ে যায়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করায় ও নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে কথা বলার অভিযোগে তাকে বেধড়ক মারধর শুরু করেন মফিজুলসহ তার সাথে থাকা লোকজন। এসময় তারা মারধরের ভিডিও ধারণও করে। ভিডিওটি মুহুর্তেই সামাজিক যোগযোগ মাধ্যেম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায় যুবলীগ নেতা শাহাদতকে একসাথে ১০ থেকে ১৫ জন ব্যক্তি কিল ঘুষি ও লাঠি দিয়ে মারধর করতে থাকে। ভিডিওতে মারধরকারীদের বলতে শোনা যায়, ওই বেটা তুই কাকে ফোন দিলি। শাহাদত জানায় আব্বাকে। তাকে আবার মারধর করতে করতে বলা হয় কেন তোর আব্বাকে ফোন দিলি তোকে কি আমরা মারছি। এসময় শাহাদত অসুস্থ জানালেও তাকে মারধর করতে করতে বলা হয় ওই তুই মুক্তা ভাইয়ের বিরুদ্ধে কি বলছিস সেটা আগে বল। এসময় কয়েকজন মারধরকারী বলতে থাকেন কই লাঠি কই। কয়েকজন মারধরকারী যুবলীগ নেতা শাহাদতকে কান ধরতে বাধ্য করেন। মারধর ও লাঞ্ছিতের দীর্ঘক্ষণ পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। ঘটনার পরপরই আহত অবস্থায় শাহাদতকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়।
পরে এ ঘটনায় ওই যুবলীগ নেতা শাহাদত বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই পঞ্চগড় সদর থানায় হত্যার উদ্যেশে মারধর, জখম, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও মারধরের হুকুমদানের অপরাধে মফিজুলকে প্রধান আসামী করে ১০ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাহিদুর রহমান বলেন, মামলার পর থেকে আমরা তৎপর ছিলাম। পরে শনিবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের মৎস খামার এলাকা থেকে হাসিবুল ও কামরুলকে এবং সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের পুকুরীডাঙ্গা এলাকা থেকে এনামুলকে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হই। শনিবার বিকেলে আদালতে তোলা হলে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় বলেন, আমরা অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি। মামলার প্রধান আসামীসহ বাকীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। #