এম এ সাত্তার, কক্সবাজার প্রতিনিধি : সড়ক ও অলিগলিতে যত্রতত্র অবৈধ পার্কিং ও ফুটপাতে ভ্রাম্যমাণ দোকান বসায় ভোগান্তিতে পড়েছেন কক্সবাজারবাসী। পৌরশহরে গড়ে তোলা হাসপাতাল-ক্লিনিক, বাণিজ্যিক মার্কেট ও ভবন আর ভাড়ায় চালিত বিভিন্ন ধরনের গাড়ির নির্দিষ্ট পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় সড়কের মোড়, অলিগলিতে পার্কিং করা হয় বিভিন্ন নামীয় যানবাহন। ফলে সৃষ্টি হয় যানজটের।
সরেজমিনে কক্সবাজার পৌরশহরের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে দেখা যায়, ব্যস্ততম সড়ক বাজার ঘাটার মেইন রোড, বাজার ঘাটার মসজিদ রোড, পৌরসভা মার্কেটের ভিতরের গলি, আইবিপি রোড কোরাল লীফের সামনে , হাসপাতাল রোড, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ রোড, রুহুল আমিন স্টেডিমমোড়,গুমগাছতলা ৬নং রাস্তার মোড়, সুগন্ধা মোড়, কলাতলী মোড়, এছালাম মার্কেটের সামনে, বাসটার্মিনালের বাইরে যন্ত্রতন্ত্র পার্কিং, লিংক রোড, বাংলাবাজার,কালুরদোকান,
কামেনী মহাজনের পেট্রল পাম্প সহ অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবৈধ পার্কিং ও দখলদার অতিক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দখলে।
ফলে নগরীতে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে যানজট। ঘটছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে ভোগান্তি। মাঝে-মধ্যে ট্রাফিক বিভাগ থেকে অভিযান চালানো হলেও অভিযানকারী দল চলে যাওয়ার পরপরই ফের দখল হয়ে যায়।
এ বিষয়ে দৈনিক সমুদ্র কন্ঠের সম্পাদক মইনুল হাসান পলাশ তাঁর ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, দীর্ঘ পাঁচটা বছর কক্সবাজার শহরের মানুষকে, অমানুষিক কষ্ট দিয়ে প্রধান সড়কটা নতুন করে বানিয়েছেন সাবেক কউক চেয়ারম্যান।তাতে শহরের মানুষের সুবিধা হয়েছে ১৫%। হকারদের সুবিধা হয়েছে ১০০%।খুরুশকুল রোডের মুখ-কালুরদোকান-বার্মিজ স্কুল মোড়-বাজারঘাটা আর পানবাজার রোডের সংযোগস্থলে সেই আগের মতো জট। আগের মতোই যা ইচ্ছে তাই।প্রধান সড়কটিতে ফুটপাত বসানোর কারণে আগের চেয়ে তিনগুণ হকার বসতে পেরেছে। হকারদের আয় বেড়েছে। হকারদের কাছ থেকে চাঁদা তোলা শহরের ক্ষমতাবানদের পালিত টোকাই টাইপ লোকদের আয় বেড়েছে। এসব লিখি নিজেকে প্রবোধ দিতে। কোনো সমাধান কল্পনাও করি না।
অবৈধ পার্কিং ও ফুটপাত দখল নিয়ে ক্ষোভের সাথে সাংবাদিক ইমাম খাইর তাঁর ফেসবুক আইডির নিউজ ফিডে লিখেন
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল গেইটের সামনে ও দুইপাশ দখল করে আছে ভ্যান গাড়ি। ফুটপাতে ব্যবসা চলে চাঁদায়।ভেতরের চলাচলের রাস্তায় পার্কিং করা থাকে মোটরসাইকেল। রোগী ও সাধারণ পথচারীরা ভোগান্তি পোহায়। মনেহয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এগুলো দেখে না। তাই আজকে দেখিয়ে দিলাম।
মাসখানেক আগে ট্রাফিক বিভাগের থেকে নিয়মিত অভিযান চালানোর ঘোষণা দিলেও তার সুফল পৌরবাসী এখনও পাননি। ফলে দিন দিন মানুষের ভোগান্তি বেড়েই চলছে।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এডভোকেট কপিল উদ্দিন জানান, আদালতের কাজে প্রত্যেক দিন কোর্টৈ যাই। ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় অফিসে যাওয়া-আসায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
ফুটপাতে ব্যবসা পরিচালনাকারী এক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা গরিব মানুষ। নিয়মিত মাসোয়ারা দিয়ে ফুটপাতে ব্যবসা করে খাই। প্রশাসন চাইলে তুলে দিতেই পারে। কিন্তু তাতে আমাদের কষ্ট আরও বাড়বে।
কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, সড়ক পার্কিং মুক্ত রাখতে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। মাঝে মধ্যে অভিযান চালানো হয়। এছাড়া পৌরশহরের প্রধান ও ভিতরে রোডে বেশ কিছু ক্লিনিক ও হাসপাতাল এবং পার্কিং বিহীন কিছু সংখ্যক বাণিজ্যিক ব্যাংক ও মার্কেট রয়েছে। এসব এলাকায় মানুষ অল্প সময়ের জন্য গাড়ি পার্কিং করে, সেটা মানবিকভাবে দেখা হয়। কিন্তু কিছু কিছু ব্যবসায়ী ও কর্মচারী দিনব্যাপী পার্কিং করে মালামাল বিক্রি করেন। তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেই।
এ ব্যাপারে সদ্য দায়িত্বভার গ্রহণ করা কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, সবাই সড়কের উপর গাড়ি পার্কিং করছে। পাশাপাশি হকারদের কারণে প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যে কারণে সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হয়ে আসছে দীর্ঘদিন।অঙ্গীকার ব্যক্ত করে তিনি বলেন, সবেমাত্র ক্ষমতা হাতে নিয়েছেন। ২/১ মাসের মধ্যে অবৈধ পার্কিং ও হকারদের উচ্ছেদ করে সড়ক, ফুটপাত দখলমুক্ত করবেন।