অনৈতিক কাজের দায় এড়াতে ছাত্রলীগ ট্যাগ ব্যবহার বন্ধ হোক।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর যৌবনের উত্তাপ দিয়ে ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি সময়ের প্রয়োজনে এদেশের অধিকার সচেতন বঞ্চিত, লাঞ্চিত শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় ও এদেশের মুক্তিকামী মানুষের মুক্তির দাবিতে যে সংগঠন নিশান উড়িয়েছে দিগবিদিক, মশাল জ্বালিয়েছে প্রজন্মের ক্ষোভের, তারুণ্যের দ্রোহের সেই সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।যে সংগঠন এদেশের প্রত্যেকটি অন্ধকারাচ্ছন্ন সময়ে আলোর প্রদীপ হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে দিক থেকে দিগন্তের তরে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে।৫২-৭১ অবধি রাজপথে অগ্রসৈনিক হয়ে প্রত্যেকটি আন্দোলন,সংগ্রামে অত্যন্ত সাহসিকতার সহিত নেতৃত্ব দিয়েছে এদেশকে।বঙ্গবন্ধুর ভাষ্যে বলা হয় “ছাত্রলীগের ইতিহাস, বাংলাদেশের ইতিহাস “। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর এই কথায় বুঝাতে বাকী থাকে না এদেশের স্বাধিকার সংগ্রামের ইতিহাসে ছাত্রলীগের অবদান কতটুকু। ছাত্রলীগ শুধু ১৯৫২-১৯৭১ সাল পর্যন্তই নয় বাংলাদেশ সৃষ্টির পরবর্তী সময় থেকে আজ অবধি এদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি ও অধিকার আদায়ে এবং এদেশের আর্ত-মানবতার সেবায় ও তাদের অধিকার আদায়ে ছাত্রলীগ সবসময় পাশে থেকে লড়াই-সংগ্রাম করে যাচ্ছে।
কিন্তু সেই ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন মহল নানাভাবে ছাত্রলীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে।অনেকে তাদের পেশাগত জীবনে কোন প্রকার অনৈতিক কাজে জড়িত হয়ে ফেঁসে গেলে তখন নিজেকে সাবেক ছাত্রলীগ হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করে থাকেন।কথা হচ্ছে কারো ব্যক্তিগত দায় সংগঠন নিবে না।আর এধরণের মানুষের অনৈতিক কাজের দরুন ছাত্রলীগ বিকৃতভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে তরুণ সমাজের কাছে।।ছাত্রলীগ তরুণ ও ছাত্র সমাজকে শৃঙ্খলা,নীতি-নৈতিকতার শিক্ষা দেয়।মানুষকে কাছে টানার দীক্ষা দেয়।সম্প্রতি সময়ে দেখা যায় বিভিন্ন পেশায় কোন পেশাজীবী তাঁর ব্যক্তিগত অনৈতিক কাজের দরুন সাংবাদিক বা মিডিয়ার মুখোমুখি হলে তাঁরা নিজেদেরকে সাবেক ছাত্রলীগ হিসেবে উপস্থাপন করেন।এতে করে ছাত্রলীগের নাম বিক্রি করে সেই অনৈতিক কাজ থেকে নিজের দায় সাড়ানোর চেষ্টা করে থাকেন। যা ছাত্রলীগ কখনো কাউকে শিক্ষা দেয় না।।ব্যক্তিগত দায় কেবল ব্যক্তির উপরে নেওয়া উচিত সংগঠনকে বিতর্কিত করার অধিকার কারো নেই।
আরেকটি বিষয় লক্ষ্য করা যায় যারা বিভিন্ন পেশায় থেকে ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে থাকেন ছাত্রলীগের কোন নেতাকর্মী কোন কাজে তাদের দ্বারস্থ হলে নেতাকর্মীরা অবমূল্যায়িত হয়ে ফিরে আসেন।যদিও সবাই এরকম নয় কিন্তু যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলে ব্যস্ত তারাই এরকম আচরণ করে থাকেন।কিন্তু যখন নিজে বিপদে পড়েন তখন নিজেকে ছাত্রলীগ বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন।ছাত্রলীগকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের এই মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ব্যক্তির অপকর্মের দায় ব্যক্তিকেই নিতে হবে।।
লেখকঃ তুষার মাহমুদ
শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।