বঙ্গবন্ধু উপাধির গোড়ার কথা ও রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাক। বিদায় ইতিহাসের অংশ রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাক ।
বঙ্গবন্ধু শব্দটি শেখ মুজিবুর রহমানের নামের আগে প্রথম ব্যবহার করেন রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাক। তোফায়েল আহমেদ বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেন শেখ মুজিবুর রহমানকে। রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাকের ‘বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে কিছু স্মৃতি ও ‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দের উৎপত্তি ‘ শিরোনামের লেখায় ( সম্ভবত এটি তাঁর শেষ লেখা ) উল্লেখ আছে। কয়েক মাস আগে তাঁর কাছ থেকে চেয়ে লেখাটি এনেছিলাম। লেখার অংশবিশেষ উপস্থাপন হলো। ( ফন্ট পরিবর্তনের কারণে বানান বিভ্রাট হয়েছে)।
গত রাত পৌণে একটায় রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাক ইন্তেকাল করেন ( ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মাগরিবের নামাজের সময় জানাজা হবে গুলশান আজাদ মসজিদে। তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।
‘বঙ্গবন্ধুর নামকরণঃ
বাঙ্গালি জাতরি জনক বঙ্গবন্ধু শখে মুজবিুর রহমান বাঙালি জাতসিত্তা বকিাশরে ইতহিাসে একাত্ম হয়ে আছনে । এরই ধারাবাহকিতায় শখে মুজবি কিভাবে বঙ্গবন্ধু অভিধায় অভষিক্তি হলনে সটেওি একটি ইতহিাস । বাংলায় বঙ্গবন্ধু নামটি তার্ত্পযবহ । বাংলা ভাষাগত জাতীয়তার মাধ্যমে যে একটি জাতি একত্রতি হচ্ছে তার একটি প্রমাণ এবং এর কন্দ্রেীয় চরত্রিকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দেওয়াও একটি গুরুত্বর্পূণ ঘটনা বটে । ১৯৬৭ সালে চট্টগ্রাম মুসলিম হাই স্কুল থেকে এসএসসি পাস করার পর আমি ঢাকা কলেজে ভর্তি হই । এখানে আমার সাথে পরিচয় হয় বঙ্গবন্ধুর জেষ্ঠ্য পুত্র সন্তান ছাত্রলীগ নেতা শেখ কামালের সাথে। আমরা দু’জন একই ক্লাসে পড়ি , সহপাঠি । কিন্তু সহপাঠির পরিচয় ছাপিয়ে আমরা দু’জনে পরিণত হই অন্তরঙ্গ বন্ধ ুহিসেবে । আমাদের বন্ধুত্বের এই সূত্রপাত ঘটিয়ে দিয়েছিলেন আওয়ামীলীগ নেতা জননেতা এম এ আজিজ । ঢাকা কলেজে ভর্তি হওয়ার কথা শুনে এম এ আজিজ আমাকে বললেন, ঐখানে মুজিব ভাইয়ের ছেলে শেখ কামাল পড়ে , তোমাকে পেলে ও খুব খুশি হবে, তোমাকে ওর দরকার ’। একথা বলে এম এ আজিজ একটি চিরকুট লিখে দিলেন শেখ কামালের কাছে। চিরকুটটি পেয়ে শেখ কামাল আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন, যেন কতদিনের পুরানো বন্ধুকে তিনি খুঁজে পেলেন । আমাদের দু’জনের মধ্যে তৎকালীন ছাত্র রাজনীতির নানা বিষয়ে কথা হতো । বিশেষতঃ ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগকে কিভাবে সংগঠিত করা যায় । এক পর্যায়ে আমাকে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকও করা হয় । ঢাকা কলজে ছাত্র সংসদরে নর্বিাচনকে সামনে রখেে তৎকালীন ছাত্র আন্দোলনরে খবরাখবর প্রকাশ, বকিাশমান বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে ছাত্রলীগরে সাংগঠনকি র্কাযক্রমরে সাথে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে আমি শখে কামালকে একটি বুলটেনি প্রকাশ করার প্রস্তাব কর।ি আমার প্রস্তাবমতে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ, ঢাকা কলেজ শাখার মুখপত্র হিসেবে ১৯৬৮ সালের নভেম্বর মাসে বুলেটিন ’প্রতিধ্বনি ’ প্রকাশিত হয় । তখনও শখে মুজবিরে নামরে সাথে সুনর্দিষ্টি কোন বশিষেণ যুক্ত হয়নি । বচ্ছিন্নিভাবে বভিন্নি নামকরণ হলওে কোনটি তমেন স্বীকৃতি লাভ করনেি । শখে মুজবিুর রহমান তখনও বঙ্গবন্ধু নামে পরিচিত হননি ,দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা তাঁকে মুজিব ভাই নামে সম্বোধন করতেন । ১৯৬৬ সাল থেকে তরুণ সমাজ তাঁর নামের আগে সিংহ-শার্দুল, বঙ্গশার্দুল ইত্যাদি খেতাব জুড়ে দিত । এই প্রক্ষোপটে শখে মুজবিরে নামরে সাথে একটি যথাযথ বশিষেণ যুক্ত করার চন্তিা আমার মাথায় ঘুরপাক খতেে থাকে দীর্ঘদিন ধরে । দ্ব-িজাততিত্ত্বরে ভত্তিতিে গঠতি পাকস্তিান রাষ্ট্ররে অসারতা উল্লখে করে ৩ নভেম্বর ১৯৬৮ পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ, ঢাকা কলেজ শাখার প্যাডে সারথী ছদ্ম নামে ’ আজব দেশ’ শিরোনামে আমি একটি নিবন্ধ রচনা করি ।
৬ দফার আলোকে লিখিত এই নবিন্ধে পাকিস্তান রাষ্ট্রের অসারতার যুক্তি তুলে ধরার পাশাপাশি গণমানুষরে অবসিংবাদতি নতো শখে মুজবিরে নামরে সাথে প্রচলতি বভিন্নি বিশেষণের সাথে র্সবপ্রথম লখিতি আকারে ’বঙ্গবন্ধু’ বিশেষণটি ব্যবহার করি । আমার ইচ্ছা ছিল এই নিবন্ধটি আমাদের বুলেটিন প্রতিধ্বনিতে প্রকাশ করতে । কিন্তু সিরাজুল আলম খানসহ ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আমাকে ওই মুহূর্তে নিবন্ধটি না ছাপানোর পরামর্শ দেন । তাঁদের যুক্তি ছিল, এই নিবন্ধ প্রকাশিত হলে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের ধারাবাহিক কার্যক্রম পুলিশী রোষানলে পড়বে একই সাথে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমার কার্যক্রম পরিচালনাও ব্যাহত হবে ।
’আজব দেশ’ নামে এই লেখায় ’বঙ্গবন্ধু’ বিশেষণটি আমার কাছে খুব যুৎসই এবং যথার্থ মনে হওয়ায় ’বঙ্গবন্ধু’ শব্দটি অন্য কোথাও ছাপার চিন্তা করলাম। ১৯৬৮ সালের নভেম্বরে প্রতিধ্বনি বুলেটিনে ঐতিহাসিক ৬ দফা পুণর্মুদ্রণের সময় সর্বপ্রথম ’বঙ্গবন্ধু’ শব্দটি আনুষ্ঠানিকভাবে ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হয় । এরপর থেকে ছাত্রলীগের বিভিন্ন প্রচারপত্রে ’বঙ্গবন্ধু’ শব্দটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতে থাকে ।
১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানরে মধ্য দয়িে আগরতলা মামলা থকেে মুক্তি পয়েে শখে মুজবি বাঙালি জাতরি অবসিংবাদতি নেতা রূপে আত্মপ্রকাশ করনে। ৬৯ এর ২৩ ফব্রেুয়ারি রসের্কোস ময়দানরে গণ সংর্বধনায় তোফায়লে আহমদ কর্তৃক বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষতি হওয়ার পর থকেইে শখে মুজবিরে নামরে সাথে এতদনিরে প্রচলিত মুজিব ভাই, বঙ্গর্শাদুল, সংিহর্শাদুল ইত্যাদি বশিষেণকে রীতমিত চিরবিদায় দিয়ে বঙ্গবন্ধু নামটিই সমুজ্জ্বল হয়ে ওঠ।ে বঙ্গবন্ধু নামটি পরর্বতীকালে তাঁর নামরে সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়য়িে পড়ে ।’
সুত্রঃ- রোর বাংলা